সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় ?

এই পোষ্টে আলোচিত বিষয় সমূহ

আজকে আমরা জানবো, সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় সে সম্পর্কে। এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র করার সকল ব্যাংকের নাম উল্লেখ করা থাকবে।অনলাইনে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম বা উপায়। কোন কোন ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র করতে পারবেন না এবং কেন সে বিষয়ে বিস্তারিত।

দেশের যেকোনো তফসিলি বা তালিকা ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায়। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন হতে পারে তফসিলী ব্যাংক কি? আবার অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন বেসরকারি ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায় কি না। অনেকে জানতে চান বাসার সাথে থাকা তুলনামূলক কম জনপ্রিয় ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যাবে কি না?

আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে থাকছে সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। চলুন এখনই জেনে নেওয়া যাক সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত।

সঞ্চয়পত্র যেসব ব্যাংকে করা যায় সেইসব ব্যাংকের নাম জানার আগে আপনার যেসব বিষয়ে জানা জরুরিঃ 

১) সঞ্চয়পত্র কি?

২) তফসিলি ব্যাংক কি?

৩) তফসিলী ব্যাংক ব্যতীত ব্যাংক কোনগুলো?

সঞ্চয়পত্র কি ? কোন কোন কাজে লাগে সঞ্চয়পত্র

বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনে জনগণকে সঞ্চয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা। একই সাথে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র সঞ্চয় জাতীয় সঞ্চয় স্কীমের মাধ্যমে জমা করার উদ্দেশ্যে এবং সাধারণের নির্ঝঞ্ঝাট অর্থ বিনিয়োগের পথ প্রশস্থ করাকে সঞ্চয়পত্র বলে।

তফসিলী ব্যাংক কি? এই ব্যাংকে বিশেষ সুবিধা কি পাওয়া যায়?

তফসিলি বা তালিকাভুক্ত ব্যাংক হচ্ছে যারা বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২-এর ৩৭ ধারানুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা অফিসিয়ালি তালিকাভুক্ত ব্যাংক রূপে ঘোষিত এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদস্য ব্যাংক তাদেরকে তফসিলই ব্যাংক বলে। 

কোন কোন ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র করা যায়? তালিকা সমূহ

শুধু মাত্র তফসিলী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে। অর্থাৎ, গ্রাহক শুধু মাত্র তফসিলী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন। কারণ, একমাত্র তফসিলী ব্যাংকই সঞ্চয়পত্র নিয়ে কাজ করে।

আরও পড়ুনঃ জীবন বীমা কি কত প্রকার এবং কি কি

তফসিলী ব্যাংকের তালিকায় দেশের সরকারি বেসরকারি সহ প্রায় ৫০ টির বেশি ব্যাংক রয়েছে। তাই খুব সহজেই বোঝায় যে, সরকারি বা বেসরকারি যে ব্যাংকই হোক না কেন ব্যাংকটি যদি তফসিলী ব্যাংকের তালিকা ভুক্ত থাকে তাহলে সেই ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র করা যায়।

আরও পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত

নিচের তফসিলী ব্যাংকের তালিকায় থাকা যেকোনো একটি ব্যাংকেই যেকোনো গ্রাহক সঞ্চয়পত্র করতে পারবেন। তবে সব ব্যাংকের সকল ব্রাঞ্চে সঞ্চয়পত্র থাকে না। কিভাবে বুঝবেন কোন শাখায় আছে তাও নিচে আলোচনা করা হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক তফসিলী ব্যাংকের তালিকায় দেশের কোন কোন ব্যাংক আছে।

দেশে তফসিলি ব্যাংকের তালিকা

ব্যাংকের নাম মালিকানা
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড সরকারি
জনতা ব্যাংক লিমিটেড সরকারি
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড সরকারি
রূপালী ব্যাংক লিমিটেড সরকারি
বেসিক ব্যাংক লিমিটেড সরকারি
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড সরকারি
পূবালী ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
এবি ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
সিটি ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড বেসরকারি
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
যমুনা ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিঃ বেসরকারি
সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বেসরকারি
বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
সিটিজেনস ব্যাংক পিএলসি বেসরকারি
সিটিব্যাংক এনএ বেসরকারি
এইচএসবিসি বেসরকারি
উরি ব্যাংক বেসরকারি
কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন বেসরকারি
হাবিব ব্যাংক লিমিটেড বেসরকারি
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ বেসরকারি
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান বেসরকারি
ভারতীয় স্টেট ব্যাংক বেসরকারি
ব্যাংক আলফালাহ্ বেসরকারি
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বেসরকারি
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বেসরকারি
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বেসরকারি
তফসিলী বা তালিকা ব্যাংক সমূহ

এতক্ষণ জানলাম তফসিলী ব্যাংক সম্পর্কে। এবার অ-তফসিলী বা অ-তালিকা ব্যাংক সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অতফসিলী ব্যাংক সমূহ । যে ব্যাংক সঞ্চয়পত্র গ্রহণ করে না

অ-তফসিলী বা অ-তালিকা ব্যাংক হলো তফসিলী ব্যাংকের ঠিক বিপরিত বিষয়। অর্থাৎ এই ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা ঘোষিত তফসিলি ব্যাংক না। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী দেশে এমন ব্যাংকের সংখ্যা মোট ছয়টি। এই ছয়টি ব্যাংক সঞ্চয়পত্র গ্রহণ করে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক, দেশে অতফসিলী ব্যাংক সমূহ কি কি।

ব্যাংকের নাম মালিকানা
জুবিলী ব্যাংক বেসরকারি
গ্রামীণ ব্যাংক বেসরকারি
আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক বেসরকারি
কর্মসংস্থান ব্যাংক বেসরকারি
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বেসরকারি
অ-তফসিলী বা অ-তালিকা ব্যাংক সমূহ

কোন কোন জায়গা থেকে সঞ্চয়পত্র কিনবেন? কোথা থেকে সঞ্চয়পত্র করা উচিত

ব্যাংক বা সঞ্চয় ব্যুরো অফিস অথবা ডাকঘর থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যাবে।বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয়পত্র অনলাইন হওয়ায় যেখান থেকেই কিনুন না কেন সকল তথ্যই কেন্দ্রীভূত হয়ে থাকবে।

আপনি যদি পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কিনতে চান তাহলে ১ লক্ষ টাকার বেশি নগদ ক্রয় করা যাবে না। এই ক্ষেত্রে ব্যাংকের চেক ব্যবহার করে বাকি অংশ কিনতে হবে। ধরুন আপনি ৫ লক্ষ টাকা নগদ একটি সঞ্চয়পত্র কিনবেন। এক্ষেত্রে ১ লক্ষ টাকা নগদ এবং ৪ লক্ষ টাকা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।

অনলাইনে সঞ্চয়পত্র কেনার উপায় কি? অনলাইনে কোন কোন ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়

আধুনিক যুগে সবকিছু অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছে। তারই বদৌলতে এখন অনলাইনে বসেও সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায়। জানা যায় সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

বাংলাদেশ সরকার সবাইকে সঞ্চয়পত্রের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষে এই উদ্যোগটি নিয়েছেন। অনলাইনে সঞ্চয়পত্র নিতে এখানে ক্লিক করুনে ক্লিক করে সরকারের আওতাধিন একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই বিস্তারিত সবকিছু পেয়ে যাবেন। অনলাইনে সঞ্চয়পত্র পেতে এবং এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঞ্চয়পত্র কোথায় কোথায় কিনতে পাওয়া যায় ? যেখানে সঞ্চয়পত্র করা যায়

মোট চারটি জায়গায় সঞ্চয়পত্র কিনতে পাওয়া যায়। 

১) বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখায়।( সদরঘাট এবং ময়মনসিংহ অফিস বাদে)

২)  শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক বাদে সকল তফসিলী ব্যাংকে। 

৩) সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনে সকল সঞ্চয় ব্যুরো অফিসে।

৪) সকল ডাকঘর সমূহে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ তফসিলি ব্যাংক গুলোর সকল শাখায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় না। তাই আপনার নিকটস্থ ব্রাঞ্চে খোজ নিয়ে জেনে নিতে পারেন সেখানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় কি না।

 সঞ্চয়পত্র সম্পর্কিত অধিক জিজ্ঞেসিত প্রশ্ন উত্তর । FAQS

১ প্রশ্নঃ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র উল্লেখিত সকল প্রতিষ্ঠান থেকে কিনতে পাওয়া যায়?

উত্তরঃ না। প্রাতিষ্ঠানিক সঞ্চয়পত্র কার্যক্রম শুধুমাত্র জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের “সঞ্চয় ব্যুরো” থেকে পরিচালিত হয়।

২ প্রশ্নঃ দেশে মোট কয়টি তফসিলি ব্যাংক আছে?

উত্তরঃ সর্বশেষ ৫১ টি তফসিলি ব্যাংক আছে।(উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী)

৩ প্রশ্নঃ ইসলামি শরিয়াহ ব্যাংক থেকে কি সঞ্চয়পত্র কেনা যায়?

উত্তরঃ না। দেশের মোট ১০ টি ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত করে। এর একটিও তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত না।

৪ প্রশ্নঃ দেশে মোট সরকারি ব্যাংকের সংখ্যা কত?

উত্তরঃ দেশে মোট ছয়টি সরকারি ব্যাংক রয়েছে। অর্থাৎ এই ব্যাংক ছয়টি সরাসরি সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়।

৫ প্রশ্নঃ দেশে মোট অ-তফসিলি বা অ-তালিকা ভুক্ত ব্যাংক কয়টি?

উত্তরঃ দেশে মোট পাঁচটি অ-তালিকাভুক বা অ-তফসিলি ব্যাংক রয়েছে।

সঞ্চয়পত্র যেসব ব্যাংকে করা যায় এবিষয়ে সর্বশেষ

আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলে আমরা বুঝতে পেরেছি সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় এই বিষয়ে। জানতে পেরেছি সঞ্চয়পত্রের নতুন নিয়ম ২০২২ সম্পর্কে। জানতে পেরেছি ডাকঘর সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম ২০২২ সম্পর্কে বিস্তারিত।

আরও পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আশা করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার পড়ে এই বিষয়ে আর কোনো অজানা কিছু থাকবেনা। এরপরেও কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে পোষ্টের নিচে কমেন্ট করে দিন।আমাদের প্রতিনিধি খুব তারাতারি আপনার কমেন্টের উত্তর দিবেন।

বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ব্লগের ফেসবুক পেজে

12 thoughts on “সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায় ?”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.